উত্তর কোরিয়ার অজানা কিছু তথ্য, যা ইতি মধ্যে জানা গিয়েছে ~ Some of North Korea's unknown information

আপনারা কি জানেন?  উত্তর কোরিয়া এমন একটি দেশ যেখানে নিয়ম কানুন খুবই অদ্ভুত। আর এই অদ্ভুত নিয়ম কানুনের জন্যই সেখানকার মানুষকে নানান রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

আপনিও কি জানতে চান? উত্তর কোরিয়ার এমন কিছু আইন যার কারণে সেখানকার মানুষেরা খুবই বিরক্ত। 

Some of North Korea's unknown information
Some of North Korea's unknown information

চলুন তাহলে আজকে এই ব্লগে জানা যাক সেখানে এমন কী কী আইন রয়েছে যার কারণে সেখানকার মানুষেরা খুবই বিরক্ত। এই আইনগুলো শোনার পর আপনারা সবাই অবাক হয়ে যাবেন।

আপনি শুনলে অবাক হয়ে যাবেন যে উত্তর কোরিয়ার আইন অনুসারে যদি কেউ অপরাধ করে তাহলে তা দুই প্রজন্মকে তার শাস্তি ভোগ করতে হবে। উত্তর কোরিয়ার আইন অনুযায়ী প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের শাস্তির বিধান রয়েছে।

 উত্তর কোরিয়াতে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর নির্বাচন হয়। কিন্তু সেখানে। প্রার্থী থাকে মাত্র একজন। আর সেটা হল "কিম জং উন।" 

 আপনাদের যেনে থাকা ভালো, যে উত্তর কোরিয়াতে কেউ তাঁর নিজের ইচ্ছে মতো চুল কাটতে পারবে না। বাংলাদেশ বা ভারতের মতো দেশগুলিতে আপনি আপনার ইচ্ছে মতো চুল কাটতে পারবেন।তবে উত্তর কোরিয়াতে সরকার মাত্র 28 ধরনের চুলের স্টাইল কে স্বীকৃতি দিয়েছে, যার মধ্যে 18 টিই মহিলাদের জন্য এবং ১০টি পুরুষদের জন্য ।

 উত্তর কোরিয়া এমন একটি দেশ যেখানে আদেশ দেওয়া হয়েছে যে, যদি কারো বাড়িতে পেন্ট করতে হয় তাহলে তাকে ব্রাউন কালার ইউজ করতে হবে।

এখন প্রশ্ন হল, বাড়ি তো আপনার? তাহলে আপনি আপনার ইচ্ছে মতো রঙ করতে পারবেন না কেন? তাহলে আপনাকে জানিয়ে দিই যে উত্তর কোরিয়াতে রং নিয়েও আইন রয়েছে। যদি ব্রাউন কালার ছাড়া অন্য কোনও কালার আপনি আপনার বাড়িতে ব্যবহার করেন তবে আপনাকে সোজা জেলে যেতে হবে। অথবা আপনার মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হবে।


 কি, আপনারা অবাক হয়ে গেলেন?

 তাহলে শুনুন এই দেশের ইতিহাসের বইয়ে শুধু মাত্র "কিম জং উন" এবং তার বাপ দাদাদের বীরত্বের গল্প পরানো হয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ইতিহাসের সাথে তাদের কোনও সম্পর্কই নেই ৷ উত্তর কোরিয়া এমন একটি দেশ যেখানে মাত্র তিনটি টিভি চ্যানেল রয়েছে। দুটি চ্যানেল শুধুমাত্র নিউজ দেখার জন্য আরেকটিতে সাত টায় অনুষ্ঠান দেখার জন্য সেখানকার টিভিতে আপনি দেখতে পাবেন যা আপনাকে সরকার দেখাতে চাই এবং আপনাকে জানিয়ে রাখি কিং জং উন, একজন উদ্ভট স্বৈরশাসক। আর এর কারণটা হল সেই তার আপন চাচা কে উলঙ্গ করে একশ কুড়িটি ক্ষুধার্ত কুকুরের সামনে ছেড়ে দিয়েছিল। উত্তর কোরিয়া এমন একটি দেশ যেখানে সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে এলাকার লোকেরা কেমন ধরনের কাপড় পরবে। উদাহরণস্বরূপ, এখানে জিন্স পরা নিষেধ।


উত্তর কোরিয়াতে আড়াই লাখের বেশি মানুষকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সেখানে এমন কঠোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাঁরা যেন কোনও ভাবে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে না পারে। উত্তর কোরিয়া সারা বিশ্বের থেকে বিচ্ছিন্ন সেখানকার পত্রিকা ম্যাগাজিন ও নিউজ চ্যানেলগুলো বাইরের বিশ্বের কোন তথ্য দেখায় না। জনগণকে শুধু সেই খবর দেখানো হয় যেটা সরকার দেখাতে চায়।শুনলে অবাক হবেন যে উত্তর কোরিয়াতে সাধারণ জনগণের জন্য কোনও রকমের ইন্টারনেট সুবিধা নেই।


ইন্টারনেট সুবিধা মাত্র কয়েকজন হাতে গোনা মানুষের কাছে উপলব্ধ। উত্তর কোরিয়ায় নিজস্ব কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে।


আপনি যদি উত্তর কোরিয়াতে বেড়াতে যান বলে ভেবে রেখেছেন তাহলে আপনাকে এই কথাটা অবশ্যই জেনে রাখা উচিত। পর্যটকরা সেখানে স্থানীয় লোকের সাথে কোনো রকমের কথাবার্তা বলতে পারবে না। পর্যটকদের উপর বিশেষ নজরদারি রাখা হয়। এমনকি তারা নিজের ইচ্ছেমতো কোথাও ঘুরতে যেতে পারবে না। উত্তর কোরিয়া বিশ্বের একমাত্র দেশ যারা আমেরিকাকে পর্যন্ত যুদ্ধের জন্য খোলামেলা চ্যালেঞ্জ জানাই, সেই সাথে উত্তর কোরিয়া আমেরিকার নৌবাহিনীর জাহাজ দখল করে রয়েছে।আপনাদের জানিয়ে দিই যে উত্তর কোরিয়ার লোকেরা অন্য কোনও দেশে গিয়ে থাকতে পারবে না। এমনকি উত্তর কোরিয়ার সরকার কোনও নাগরিককে দেশের বাইরে যেতে দেবে না। উত্তর কোরিয়াতে পর্যটকরা মোবাইল ফোন নিয়ে ঘোরাফেরা করতে পারবে না। বিমানবন্দরে তাঁদের কাছ থেকে।মোবাইল ফোন জমা নিয়ে নেওয়া হয় এবং দেশে ফেরত যাওয়ার সময় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। উত্তর কোরিয়াতে দরিদ্রতা নিয়ে কথা বলা আইনত অপরাধ।


সবাইকে খুশি মানে সব সময় হাসিখুশি থাকতে হবে। এটাই হল উত্তর কোরিয়ার আইন। উত্তর কোরিয়া গরীবের ছবি তোলা কঠোরভাবে নিষেধ।আসলে কোরিয়ার শাসক বিশ্বাস করে যে গরিবের ছবি বিশ্বের মানুষের সামনে এলে দেশের মান ইজ্জত নষ্ট হয়ে যাবে। শুনলে বিশ্বাস করবেন না। উত্তর কোরিয়াতে সামান্য অপরাধের জন্য আপনার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। এখানে বাইবেল রাখা বা উত্তর কোরিয়ার কোনও সিনেমা।অথবা পর্নোগ্রা*ফি দেখলে আপনার মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়। বন্ধুরা বিশ্বাস করুন অপরাধের জন্য কোনও ক্ষমা নেই দেশে।


উত্তর কোরিয়া সরকার প্রতিটি বাড়িতে একটি রেডিও সিস্টেম লাগিয়ে রেখেছে। এখানকার নাগরিকরা চাইলেও সেটা বন্ধ করতে পারবে না। বাধ্যতামূলক ভাবে রেডিওটি তাদেরকে শুনতে হয়। আপনারা যদি ভেবে থাকেন যে উত্তর কোরিয়াতে বর্তমানে 2023 সাল চলছে তাহলে আপনি একেবারেই ভুল ভাবছেন। উত্তর কোরিয়ার নিজস্ব ক্যালেন্ডার রয়েছে উত্তর কোরিয়ার ক্যালেন্ডারের মোতাবেক বর্তমানে উত্তর কোরিয়াতে। একশ 11 সাল চলছে। আসলে উত্তর কোরিয়ার ক্যালেন্ডার শুরু হয় কিম জং উনের দাদা কিম ইল সুংয়ের জন্মের পর থেকে।


 শুক্রবার এবং রবিবারে সারা দেশে ছুটি দেওয়া হলেও উত্তর কোরিয়াতে শুক্রবার এবং রবিবারেও কোনও ছুটি নেই। কোনও রকমে ছুটি ছাড়াই সেখানে কাজ করে যেতে হয়।যেখানে সারা বিশ্বের মুসলিম দেশগুলিতে শুক্রবার ছুটি পালন করা হয় এবং মুসলিম বাকি যত দেশ রয়েছে সব দেশেই রবিবার ছুটি পালন করা হয়।কিন্তু উত্তর কোরিয়াতে কোনও রকমে সপ্তাহে ছুটি দেওয়া হয় না। উত্তর কোরিয়াতে সপ্তাহের সাত দিনই কাজ করতে হয়। আর তার সপ্তাহে ছয় দিনের বেতন পায় এবং বাকি এক দিনের বেতন দেশের উন্নতির কাজে লাগানো হয়।


তো প্রিয় পাঠকগন এই ছিল উত্তর কোরিয়ার কিছু অদ্ভুত রকমের নিয়ম কানুন। আশা করি ব্লগটি পড়ে আপনাদের উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন । 


 যদি ব্লগের পোস্ট টি ভালো লেগে থাকে তাহলে ব্লগটি ফলো, কমেন্টল ও শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Post a Comment

Previous Post Next Post