স্ক্রিনপ্রিন্টে কিভাবে কাজ করা হয় ? পড়ুন বিস্তারিত
এরপর হার্ডওয়ারের দোকানে পাওয়া যায় এমন প্যারাসুট দড়ি নিতে হবে এবং কিছু 1/2 ইঞ্চি পিন নিয়ে ফ্রেমের একটি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের দিকে একটু করে বাড়তি কাপড় রেখে অন্য দৈর্ঘ্য প্রস্থের দিকটা প্রথমে একাই পিন গুলি হ্যামার দিয়ে মারতে হবে। এক্ষেত্রে কাপড়ের উপর দিয়ে ফ্রেমের উপর সাইডে নালী অংশের উপরে প্যারাসুট দড়ি সেট করে দড়ির উপর দিয়ে পিন মারতে হবে ।
এবার অন্য পাশের দৈর্ঘ্যের অংশটি একটু করে অন্য এক জনের সহায়তায় টানটান করে টানতে হবে এবং পিন মারতে হবে। একটু একটু করে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অংশ এভাবে পিন করতে হবে । খেয়াল রাখতে হবে যেন কাপড়টি টানটান হয় ( টাইট হয় )। প্যারাসুটের শেষ প্রান্তটি ফ্রেমের সাথে পিন করে আটকাতে হবে ।
এরপর সোনাকোট টা তৈরি করতে হবে, সোনাকোটের সঙ্গে দুটি sensitizer দেওয়া হয় দোকান থেকেই ওটা 100 ML জলে 2 টোর একটু কম বা 75 ML জলে একটি দিয়ে গুলে একটি বোতলে রাখতে হবে । এটি কমলা রঙের হয় (মিশ্রণটি)।
এবার 2 মুটকি সোনাকোট এবং তার সাথে 10 ফোটা সেনসিটাইজার মিশিয়ে দ্রবনটি ভালো ভাবে মিশিয়ে তৈরি করতে হবে । এই দ্রবনটি কৌটায় রেখে দিলেও পরে ব্যবহার করা যাবে। এই মিশ্রণ টির নাম কোটিন ।
এবার এই কোটিন কিছুটা ফ্রেমের মেস কাপড়ের উপরে দিয়ে একটি স্কেল দিয়ে টেনে মেস কাপড়টির উপর লাগাতে হবে । একপাশে দিলে অন্য পাশে আপনা আপনিই চলে যায়। স্কেল দিয়েই অপর পাশটিও ঐ রঙে রং করতে হবে । খুব হালকা ভাবে টেনে অবশিষ্ট /অতিরিক্ত সোনাকোট গুলি ফ্রেম থেকে চেছে তুলে নিতে হবে (এই দ্রবণটি কলাপাতা রঙের হয়)। তাই এই কাজটি করার পর মেস কাপড়টিও সবুজ রঙের হয়। এবার হেয়ার ড্রায়ার অথবা ফ্যানের হাওয়া দিয়ে ফ্রেম টি ভালো ভাবে শুকিয়ে নিতে হবে ।
লাইট বক্সটি তৈরি করতে হবে প্লাইউড দিয়ে। নির্দিষ্ট মাপের একটি বক্স (দৈর্ঘ্য× প্রস্থ ×উচ্চতা) বানাতে হবে ।নীচে ক্লাম লাগিয়ে 3 টি টিউব লাইট কানেক্ট করতে হবে। পাশের ছিদ্র দিয়ে তারটি বের হবে । দুপাশে চারটি ছিদ্র করে হাতল লাগাতে হবে ।
লাইট বক্সের পুরো জানকারীর জন্য নিচের ভিডিও টি দেখতে পারেন।
এরপর একটি কাঁচ সর্বনিম্ন 5mm নিতে হবে যেটি লাইট বক্সের উপরে রাখা যায় এবং ফ্রেম টি যাতে সম্পূর্ণ ভাবে কাঁচের উপর বসতে পারে। ফ্রেম যেন কাঁচের থেকে বড় না হয় ।
কাঁচের উপর সোজা ভাবে প্রিন্ট করা ট্রেসিংটি বসাতে হবে তার উপর ফ্রেমটি বসাতে হবে । দেখে নিতে হবে উপর থেকে ট্রেসিংটি ঠিক মতো বসানো হয়েছে কি না অর্থাৎ দুপাশের জায়গা, ব্যাকা ইত্যাদি আছে কি না তারপর ফ্রেমের উপর A4 size এর সাদা পৃষ্ঠা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে পুরো স্ক্রিন টা । তারপর একটি বড়ো পুটলিতে বালি ভরে নিয়ে বেধে সেটা ফ্রেমের উপর যে A4 page আছে তার উপর বসাতে হবে এবং বালিগুলি পুটলির উপর থেকে হাত দিয়ে ফ্রেমের সব দিকে সরিয়ে সরিয়ে দিতে হবে যাতে ফ্রেমের মধ্যে স্ক্রিন কাপড়ের সম্পূর্ণ অংশে সমান ভাবে বালির চাপটি পায় । এরপর পুরো বক্সটি একটি বড়ো কাপড় বা চাদর দিয়ে ঢেকে দিয়ে লাইটের সুইচ অন করতে হবে । আমাদের প্র্যাকটিস করা ফ্রেম অনুযায়ী (30×20×9) ৮ মিনিট পরে লাইটের সুইচ বন্ধ করে সব খুলে ফ্রেম টি নিয়ে নিতে হবে এবং জল দিয়ে ফ্রেমের দুপাশ স্প্রে করে ভিজিয়ে দিতে হবে । কিছুক্ষণ রাখার পর দেখা যাবে ফ্রেমের মধ্যে যে লেখার ছাপ উঠেছে সেগুলির অক্ষরগুলি থেকে সোনাকোট প্রলেপ সরে ট্রান্সপ্যাকেট হয়ে যাচ্ছে সেক্ষেত্রে ভালো ভাবে জল স্প্রে করতে হবে এবং হাত দিয়ে ডলে লেখার মধ্যের অংশগুলি সরিয়ে ট্রান্সপ্যাকেট হতে সাহায্য করতে হবে ।
লাইট বক্সের ভেতর থেকে ফ্রেমটি বের করে জল স্প্রে করার পর ফ্রেমের লেখা বাদে অংশে হাত দিয়ে ডলে দেখতে হবে যদি সেটা আঠালো বা চ্যাটচেটে ভাব হয় তাহলে ঠিক মতো এক্সপোজ হয়নি , টাইম কম হয়েছ।
ফ্রেমের মধ্যে অক্ষরগুলি বাদ দিয়েও যেগুলি থাকার কথা নয় বা ট্রান্সপ্যারেট হওয়ার কথা নয় সেটিও ট্রান্সপ্যারেট হয়ে যাচ্ছে তাহলে বুঝতে হবে এক্সপোজ টি অনেক কম সময় করা হয়েছে, সময় বাড়াতে হবে ।
এরপর টেবিলের উপর বা একটা সমান্তরাল কাঠের উপর দুটি 'C' ক্লাম লাগাতে হবে সেই 'C' ক্লাম দুটির মধ্যে ফ্রেমটি টাইট করে আটকে সারফেস প্লেটের উপর ম্যাটেরিয়াল রেখে প্রিন্ট করতে হয় । এই প্লেটটি বানিয়ে নিতে হবে ।
রঙের মধ্যে পরিমাণ মতো রিডিউসার মিশিয়ে রং টাকে পাতলা করতে হবে । একটু পাতলা হলে রং করতে সুবিধা হয় খরচও কম হয়। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন বেশি পাতলা না হয়। এইবার ফ্রেমের নীচে যেটার উপর প্রিন্ট হবে সেটি রেখে ফ্রেম টাকে নামিয়ে ঠিক মতো জিনিসটা সেটা হচ্ছে কি না দেখে নিতে হবে।তারপর ফ্রেমের উপর কিছুটা কালি দিতে হবে এবং স্কুইজি দিয়ে রং টা উপর থেকে নিচে টানতে হবে । রং টেনে বেশি নিচে নেওয়া যাবে না । লেখা যেখানে শুরু সেখান থেকে লেখা যেখানে শেষ সেই পর্যন্ত টেনে নিলেই হবে । রং টানার পর স্কুইজি টা প্রতি বার C ক্লামের সাথে হেলান দিয়ে রেখে তারপর ফ্রেম উঁচু করে প্রিন্ট করা জিনিসটা বের করতে হবে ।
বলা বাহুল্য ফ্রেমটিতে প্রিন্ট করার জন্য কালি দেওয়ার আগে ফ্রেমের সব দিক ভেতর থেকে যেদিকে কালি দেব সেই দিকে সেলোটেপ দিয়ে আটকে দিতে হবে যাতে রং কাঠের অংশে না লাগতে পারে বা কোনায় ঢুকে না যায় । কালি শুধু মেস কাপড়েই থাকবে ।
এক্সপোজের সময় 15 সেকেন্ড সর্বোচ্চ বেশি হলেও অসুবিধা নেই। এক্সপোজ করার পর ফ্রেমে জল স্প্রে করে অক্ষরগুলি ট্রান্সপ্যারেট করার সময় হাত দিয়ে ঘসতে গেলে ফ্রেমের অপর প্রান্তে আরেকটি হাতের সাপোর্ট দিয়ে তুললে সুবিধা হয় ।
প্রিন্ট হয়ে গেলে প্রথমে স্ক্রিনে যে রং লেগে থাকবে সেটা তুলতে হবে । এক্ষেত্রে রিডিউসার ব্যবহার করতে হবে । রং যদি খুব হার্ড হয় উঠতে না চায় তাহলে বেঞ্জিল দিলে উঠে যাবে ।
এবার ফ্রেমের মেস কাপড়ের উপর সোনাকোটের যে নীল রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ তুলতে হলে কালো রঙের প্যাকেটের ডিকোডিং টা এক প্যাকেট 250 গ্রাম জলে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে । সেটা ফ্রেমের মেস কাপড়ের উপর দিয়ে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখতে হবে হাতে দিয়ে ভালো ভাবে ফ্রেমে লাগিয়ে দিতে হবে । কিছু সময় পরে সোনাকোট গলে গেলে তখন জল দিয়ে ফ্রেমটি ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে হবে ।
বিস্তারিত তথ্য লিখেছেন- পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
নাম- নিতাই অধিকারী, ঠিকানা- বনগাঁ, পশ্চিমবঙ্গ।
Friends Computer- ব্যাচ অনুযায়ী স্ক্রিনপ্রিন্টিং শিখিয়ে থাকে, আপনি আমাদের ট্রেনিং করানো ফিডব্যাক দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে দেখতে পারেন।
আপনি যদি আমাদের কাছে স্ক্রিনপ্রিন্ট শিখতে চান, তাহলে এই নং এ যোগাযোগ করুন- +91 9641181960
আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল- https://www.youtube.com/@FriendsComputer